লে-আউট: (Layout)

লে- আউটঃ.
লে- আউট হলো যে বিল্ডিং নির্মিত হবে তার proper drawing সরাসরি প্রস্তাবিত জমির উপর স্থাপন করতে হবে।
লে-আউট দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী ( যাহা ঠিকাদার সরবরাহ করবে)। যেমনঃ
১) স্টিল মেজারিং টেপ ১৬'-০"(5 m) এবং ১০০'-০"(30m) লম্বা  ।
২) হেমার।
৩) লাল রঙ এবং ব্রাশ (গ্রীড লাইন মার্কিং এর জন্য)।
৪) সুতা (প্লাষ্টিক)
৫) মাটাম
৬) ওয়াটার লেভেল পাইপ
৭) বাশের খুটি
৮) তাগারি
৯) কুর্নি, ইত্যাদি।
ভবনের লে-আউট দেয়ার জন্য আজ কাল টোটাল ষ্টেশনের বহুল ব্যবহার চোখে পড়ছে। বাংলাদেশে বেশ কিছু ডিজিটাল সার্ভে কোম্পানী আছে যারা টোটাল ষ্টেশনের মাধ্যমে নির্ভুলভাবে ইমারতের লে-আউট দিয়ে থাকে।
তারপর ও নিচে লে-আউট দেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় উপাদানের নাম দেয়া হলঃ
১। টোটাল ষ্টেশন বা লেভেল মেশিন
২। নাইলনের সুতা
৩। পেরেক
৪। হাতুড়ি
৫। অস্থায়ী বাঁশের খুটি
৬। স্থায়ী কঙ্ক্রীটের খুটি
৭। স্টীলের একটি বড় সমকোনী ত্রিভুজ
৮। টেপ (১০০ ফুট)
৯। মাঝারি সাইজের প্লাম্ব বব বা ওলোন
মেটেরিয়ালঃ
============
সিমেন্ট ১ ব্যাগ
লোকাল সেন্ড ১০ সি.এফ.টি
বর্ননাঃ
============
কোন ভবনের লে-আউট দেয়ার জন্য যে ড্রয়িং তৈরী করা হয় সেখানে সাধারনত a,b,c,d…… ও 1,2,3,4…… এই দুই ধরণের গ্রীডলাইন ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
a,b,c,d…… গ্রীড লাইনগুলো একে অপরের সমান্তরাল
আবার 1,2,3,4…… গ্রীড লাইনগুলোও পরষ্পর পরষ্পরের সমান্তরাল হয়ে থাকে।
কিন্তু a,b,c,d…… গ্রীড লাইনগুলো 1,2,3,4……গ্রীড লাইনের সাথে সমকোণ তৈরী করে। এই দুই ধরণের গ্রীড লাইনের ছেদ বিন্দুটিতে সাধারণতঃ কলাম  অবস্থান করে থাকে।
লে-আউট দেয়ার প্রধান কাজ হলো ড্রয়িং থাকা উপরে বর্ণিত ঐ সমস্ত গ্রীডলাইনগুলোকে বাস্তব পরিমাপের মাধ্যমে প্রকৃত জমিতে স্থানান্তর করা। কয়েকটি ধাপের মাধ্যমে সেই কাজটি প্রকৌশলীরা করে থাকেন-
প্রথমে একটি বেসলাইন (Baseline) বা সীমারেখা নির্ধারণ করতে হয়। সীমারেখাটি সাধারণতঃ
পার্শ্ববতী কোনো ভবন বা রাস্তার মধ্যরেখা (centerline) এর সমান্তরালে একটি নির্দিষ্ট দুরুত্বে চিহ্নিত করা হয়।
বেসলাইনের সমান্তরাল করে ড্রয়িং এ অঙ্কিত বিভিন্ন গ্রীডলাইনগুলো (a,b,c,d……) কে ভূমিতে স্থানান্তর করা হয়। কিছু অস্থায়ী বাঁশের খুটির সাহায্যে এই সমস্ত গ্রীডলাইনগুলোকে চিহ্নিত করা হয়।
এরপর যেকোন একটি সুবিধামত গ্রীডলাইনের (1,2,3,4……) সাথে সমকোণে রেখে আরেকটি গ্রীডলাইন চিহ্নিত করা হয়।
একইভাবে লম্ব বরাবর যে গ্রীডলাইন পাওয়া গেল সেগুলো সমান্তরাল করে আগের মত আবার নতুন গ্রীডলাইন বসানো হয়।
সাময়িক বা অস্থায়ী খুটির বদলে কংক্রীটের খুটি ব্যবহার করে গ্রীডলাইনগুলোকে স্থায়ী করে রাখা হয় যাতে ভবিষ্যতে যেকোন প্রয়োজনে গ্রীডলাইনগুলো অস্তিত্ব পাওয়া যায়।
লেভেল মেশিনের সাহায্যে রাস্তার চুড়ার তলের উপর ভিত্তি করে ভবনের প্লিন্থ লেভেল নির্ধারণ করতে হয়। প্লিন্থ লেভেলের চিহ্নটি এমন এক স্থানে রাখতে হয় যেখানে সহজে যাওয়ার ব্যবস্থা আছে, সহজে দেখা যায় ও ভবন নির্মানের শেষ পর্যন্ত যেই স্থানের অস্তিত্ব থাকবে।
পরষ্পর লম্ব দুইটি গ্রীডলাইনের ছেদবিন্দু থেকে কলাম ও ফাউণ্ডেশনের সাইজ, অবস্থান এবং গভীরতা নির্ধারণ করা হয়।
কাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে পরষ্পর লম্ব চারটি গ্রীডলাইনের দ্বারা আবদ্ধ বর্গক্ষেত্রের কর্ণের দৈর্ঘ বারবার পরীক্ষা করতে হয় যাতে উক্ত গ্রীডলাইনগুলোর মাঝে ৯০ ডিগ্রি থাকে। কারণ আমরা জানি একটি পূর্ণাংগ বর্গক্ষেত্রের কর্ণ দুইটি সবসময় সমান থাকে।
ভবনের লে-আউট দেয়া ভবন নির্মানের বেশ গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি আসলে গণিতের জ্যামিতি বিষয়ের একটি পরিপূর্ণ ব্যবহারিক ঘটনা। ভবনে লে-আউট দিয়ে কাজ করলে বিভিন্ন সুবিধা পাওয়া যায় যেমনঃ
ভবন নির্মানের ক্ষেত্রে ভুল হবার সম্ভাবনা কম হয়।
ভবন নির্মান কাজে ব্যবহৃত ফোরম্যান বা মিস্ত্রি সঠিক-সুন্দর ভাবে ও নির্বিঘ্নে কাজ চালিয়ে যেতে পারে।
নির্মান কাজের বিভিন্ন পর্যায়ে কলামের অবস্থান পূনঃপরীক্ষার জন্য স্থায়ী লে-আউটের প্রয়োজন হয়।
ভবনের নকশা বা আসল জমিতে কোন রকম সমস্যা থাকলে লে-আউট চলাকালীন সময়ে সংশোধন করা যেতে পারে।
লে-আউট প্লেসিং এ সতর্কতা
========================
 আর্কিটেকচারাল ড্রয়িং, রাজউক এপ্রুভাল ড্রইং এবং সার্ভে ড্রইং অনুযায়ী প্রস্তাবিত জমির মাপ ঠিক আসে কিনা তা চেক করতে হবে।
 রোড ক্রেষ্ট লেভেল হতে সাধারণত ৩.৫ ফুট উপরে সাইটের বিভিন্ন স্থানে লেভেল স্থাপন করতে হবে।
 আর্কিটেকচারাল ড্রয়িং এর রেফারেন্সে গ্রিড লাইন অনুসারে সুতা বাধতে হবে।
 সুতা বাধার পর প্রত্যেকটি কোন সমকোন আছে কিনা তা দেখে নিতে হবে ( মাটাম এবং ৩,৪,৫ পদ্ধতিতে চেক করা যেতে পারে) এবং কোনাকুনি মাপ ঠিক আছে কিনা তা চেক করতে হবে।
 গ্রীড লাইন হতে রাজউকের ড্রইং অনুযায়ী পর্যাপ্ত জায়গা ছেডে দিতে হবে।
 এক গ্রীড লাইন হতে অপর গ্রীডলাইন ঠিক আসে কিনা তা যাচাই করতে হবে।
 গ্রীড লাইন হতে কোন পার্শ্বে জায়গা কম বা বেশি পাওয়া গেলে তা নিশ্চিত করে উর্ধতন, কতৃপক্ষকে জানাতে হবে। পরবর্তী সিধান্ত অনুযায়ী লে- আউট ঠিক করতে হবে।
 গ্রীড লাইন এর পয়েন্ট গুলো এ প্রয়োজনীয় জায়গা চিপিং করে ১০" x ১০" x ১" সিমেন্ট বালির মর্টার দিয়ে স্থায়ী ভাবে চিহ্নিত করে রাখতে হবে। অন্যথায় বাশের খুটি মাটিতে কমপক্ষে ৩ ফুট প্রবেশ করে স্থায়ী ভাবে গ্রীড লাইনের চিহ্ন রাখতে হবে।
 গ্রীড লাইন চিহ্নিত পয়েন্ট গুলতে গ্রীডলাইন নাম্বার ও একটি গ্রীড হতে অপর গ্রীডের দুরত্ব রঙ দিয়ে লিখে রাখতে হবে।
 উপরোক্ত গ্রীড লাইনের রেফারেন্স এ আর্কিটেকচারাল এবং স্ট্রাকচারাল ড্রয়িং মোতাবেক কলাম ফুটিং এর লে- আউট দিতে হবে। কোন সমস্যার উদ্ভব হলে যথাযথ কতৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ করতে হবে। (সংগ্রহকৃত)

Post a Comment

Previous Post Next Post